ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট। তবে বিভিন্ন কারণে অনেক সময় আমাদের ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার প্রয়োজন হয়। এই লেখাটিতে আপনাদের জানানো হবে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে।

সাধারণত দ্বৈত ভোটার হলে কিংবা ভুল বয়স দিয়ে ভোটার হলে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার প্রয়োজন হয়। অনেকে ভোটার আইডি কার্ডের নাম কিংবা অন্য কোন তথ্য ভুল হলে, পুনরায় ভোটার হবার জন্য আবেদন করে। এটা সম্পূর্ণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

যদি কেউ এভাবে দুইবার ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করে থাকেন, তাহলে দ্রুত ভোটার আইডি কার্ড বা ভোটার আবেদন বাতিল করার জন্য নির্বাচন অফিসের কাছে ভুল স্বীকার করে আবেদন করতে হবে। অন্যথায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচিং এর সময় ধরা পড়লে জেল জরিমানা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

তাই চলুন জেনে নেই কেন ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করা প্রয়োজন এবং ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে।

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার কারণ

সাধারণত অনেকেই প্রথমে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে ভুল আশায় পরবর্তীতে পুনরায় ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করে। এটা সম্পূর্ণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যারা দ্বৈত ভোটারের জন্য আবেদন করেছেন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচিং এর সময় ধরা পড়লে নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এতে আপনার জেল ও জরিমানা হতে পারে। বিশেষ করে আপনি যদি দ্বৈত ভোটার হয়ে থাকেন বা দ্বৈত ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেন তাহলে ১টি ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে হবে। এছাড়াও অনেকে বয়স কমিয়ে ভুল তথ্য দিয়ে ভোটার হয়।

পরে দেখা যায় একাডেমিক সার্টিফিকেট এর সাথে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যের গরমিল থাকে, এমত অবস্থায় ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার প্রয়োজন হয়। এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার প্রয়োজন হয়।

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে কি কি লাগে

ভোটার আইডি কার্ড বাতিলের জন্য প্রথমে জেলা নির্বাচন অফিসে একটি আবেদনপত্র বা দরখাস্ত জমা দিতে হবে। এবং এর সাথে কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে। ডকুমেন্টসগুলো হলঃ

  • জন্ম নিবন্ধন এর কপি।
  • পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি।
  • যেই ভোটার আইডি কার্ডটি বাতিল করতে চান, তার কপি।
  • যে ভোটার আইডি কার্ডটি আপনি ভবিষ্যতে ব্যবহার করতে চান বা আসল ভোটার আইডি কার্ডের কপি।
  • সরকার প্রদত্ত কোন ডকুমেন্টস থাকলে তা সংযুক্ত করতে হবে।
  • যদি ডুপ্লিকেট বা বাতিলকৃত ভোটার আইডি কার্ড থাকে তা জমা করতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার জন্য প্রথমে নির্বাচন কমিশন অফিস বরাবর আবেদনপত্র জমা করতে হবে। এবং উক্ত আবেদনপত্রের সাথে জন্ম নিবন্ধনের কপি, বাতিলকৃত ভোটার আইডি কার্ড বা ডুপ্লিকেট ভোটার আইডি কার্ড ইত্যাদি জমা করতে হবে।

ভোটার হওয়ার পরে যদি কোন ব্যক্তি মারা যায় তাহলে অটোমেটিক ভাবে তার ভোটার আইডি কার্ডটি বাতিল হয়ে যাবে। কিন্তু জীবিত অবস্থায় যদি কেউ কোন কারনে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে চায়, তাহলে কারণ উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশন অফিস বরাবর আবেদন করতে হবে।

একজন ব্যক্তির ২ বার ভোটার হওয়া সম্পূর্ণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র একবার ভোটার হতে পারবে, যদি কেউ ২ বার ভোটার হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার পদ্ধতি নিচে বিস্তারিত আকারে বর্ণনা করা হলো।

১. দরখাস্ত করুন

ভুলবশত ২ বার ভোটার নিবন্ধন হয়েছেন, আপনি ভুল স্বীকার করে ১টি ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে চান। এমন কারণ উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশন অফিস বরাবর একটি আবেদন পত্র জমা দিতে হবে। যেই ভোটার আইডি কার্ডটি বাতিল করতে চান তার নাম্বার জানা থাকলে উল্লেখ করবেন।

এর পাশাপাশি সঠিক ও আসল (যেই আইডি কার্ডটি আপনি রাখতে চান) ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার উল্লেখ করবেন। আবেদনপত্রটি বা দরখাস্তটি কম্পিউটার কম্পোজ হলে ভালো হবে।

২.ডুপ্লিকেট ও আসল ভোটার আইডি কার্ড জমা দিন

এরপরে দরখাস্তের সাথে ডুপ্লিকেট ও আসল ভোটার আইডি কার্ডটি জমা দিতে হবে। ডুপ্লিকেট ভোটার আইডি কার্ড হল, ভুলবশত আপনি যেই ভোটার আইডি কার্ডটি রেজিস্ট্রেশন করেছেন যেটি এখন বাতিল করতে চান।

এবং আসল ভোটার আইডি কার্ড হল, যেই ভোটার আইডি কার্ডটি আপনি সকল নাগরিক সেবা উপভোগের জন্য ব্যবহার করতে চান এই দুইটি ভোটার আইডি কার্ড জমা দিতে হবে। যদি ডুপ্লিকেট ভোটার আইডি কার্ড না থাকে তাহলে, দরখাস্তে উল্লেখ করে আসল আইডি কার্ডটি জমা দিতে হবে।

৩.অন্যান্য কাগজপত্র জমা করুন

এরপরে আপনার ঠিকানা ও পরিচয় প্রমাণের জন্য দরখাস্ত বা আবেদন পত্রের সাথে উপরে উল্লেখিত অন্যান্য ডকুমেন্টস গুলো জমা করতে হবে। ঠিকানা ও পরিচয় প্রমাণের জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও পাসপোর্ট ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন।

৪.আবেদন ফি জমা করুন

এরপরে ব্যাংক থেকে চালানের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার আবেদন ফি জমা করে দরখাস্ত বা আবেদনপত্রের সাথে চালানের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে। যথা নিয়মে ব্যাংক থেকে চালানের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল ফি পরিশোধ করে চালান রশিদ সংযুক্ত করুন।

৫.নির্বাচন কমিশন অফিসে জমা করুন

এরপরে আবেদন পত্রটি ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো নির্বাচন কমিশন অফিসে জমা করতে হবে। পরবর্তীতে আপনার আবেদন পত্রটি এবং অনলাইন থেকে সকল তথ্য যাচাই করে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করে দিবে।

আপনি যদি দ্বৈত ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে যত দ্রুত সম্ভব আপনার ভোটার আইডি কার্ড বাতিলের জন্য আবেদন করুন। অন্যথায় বিভিন্ন ধরনের আইনত সমস্যার সম্মুখীন হবেন। কোন নাগরিক যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ২ বার ভোটার হয় তাহলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা সহ ৬ মাসের সাশ্রম কারাদণ্ড হতে পারে।

বাতিলের আবেদন করার ১ মাসের মধ্যে আপনার ভোটার আইডি কার্ডটি বাতিল করে দেয়া হবে। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আবেদন করার পরে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল হতে ২ মাস সময় লাগতে পারে।

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ আশা করি ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে কোন তথ্য জানার থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে পারেন।

Similar Posts

Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Sharmin
Guest
Sharmin
7 months ago

Nid te vaiya husband name change korte cachi karon 10 year age ami divorce diye dei bigoto 1 year holo amar biye hoyeche nid te ager husband name ache tahoe ki kore change korbo r vaiya ami pora suna kori nai onk 2005 class 8 a pori certificate chilo na tahole certificate chara ki ki joma deya jabe tate amar nid ta thik hobe plz jodi janar onk help hobe