পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন নুতন পদ্ধতিতে
অনলাইনের মাধ্যমে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার পদ্ধতি সম্পর্কে এই লেখাটিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। যারা অনেক আগে ভোটার হয়েছেন, অনলাইনে আপনাদের আইডি কার্ড খুঁজে পাচ্ছেন না! এই লেখাটিতে দেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনার আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করতে পারেন।
সাধারণত 2015 – 2016 সালের আগে যারা ভোটার হয়েছেন, তাদের আইডি কার্ড অনলাইন থেকে একবার ডাউনলোড করা হয়েছে। তাই আপনারা পুনরায় ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারতেছেন না। যারা 2016 সালের পরে ভোটার হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি হবে না।
তারপরেও যদি নুতনদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে, একই পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনার ভোটার আইডি কার্ড’টি ডাউনলোড করতে পারবেন। পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য থানায় জিডি করে জিডি’র কপি আপলোড দেয়ার প্রয়োজন হবে।
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
এজন্য প্রথমে থানায় গিয়ে একটি GD করতে হবে। তারপরে nidw ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করে, 230 টাকা ফি প্রদান করে ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদনের 10 থেকে 15 দিন পরে nidw একাউন্ট থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
পুরাতন ভোটারদের ক্ষেত্রে “ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে অথবা ভোটার আইডি কার্ড নষ্ট হয়ে গেছে” এই মর্মে একটি জিডি (GD) করে, একই মর্মে ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে হবে।
অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে, প্রথমে নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট nidw-তে অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। যারা পূর্বে একাউন্ট রেজিস্টার করেছেন তাদের পুনরায় একাউন্ট করার প্রয়োজন নেই। আপনারা পূর্বের একাউন্ট লগইন করে নিবেন।
লেখাটির সম্পূর্ণ প্রসেসঃ
- প্রথমে nidw অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করব।
- তারপরে থানায় জিডি (GD) করে জিডির কপি ও অফিসারের নাম ও নাম্বার সংগ্রহ করবো।
- পুনরায় nidw ওয়েবসাইট থেকে আইডি কার্ড রিইস্যুর জন্য আবেদন করব।
- সর্বশেষে অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করব।
চলুন জেনে নেই প্রথমে nidw অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করার পদ্ধতি। যাদের পূর্বে একাউন্ট করা আছে তারা এই স্টেপটি স্কিপ করতে পারেন। আপনারা পূর্বের একাউন্ট লগইন করে nidw ওয়েবসাইট থেকে আইডি কার্ড রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
১.nidw অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করার পদ্ধতি
nidw একাউন্ট রেজিস্টার করার জন্য প্রথমে https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ এই লিংকে ক্লিক করে নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। তারপরে নতুন একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করার জন্য “রেজিস্টার করুন” বাটনে ক্লিক করুন।
তারপরে আপনারা ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার প্রদান করুন। আপনি যদি নূতন ভোটার হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ফরম নাম্বার প্রদান করতে পারেন। একই সাথে ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী আপনার জন্ম তারিখ বসিয়ে দিন। এরপরে নিচের ক্যাপচাটি সঠিক পদ্ধতিতে পূরণ করে “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করুন।
তারপরে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য অনুযায়ী আপনার ঠিকানা বাছাই করুন এবং “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন। ঠিকানা বসানোর ক্ষেত্রে আপনার বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানার উপজেলা জেলা ও বিভাগ সঠিকভাবে বাছাই করুন।
তারপরে একটি সচল ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার প্রদান করুন। মোবাইল নাম্বার বসিয়ে “বার্তা পাঠান” বাটনে ক্লিক করলে উক্ত নাম্বারে একটি OTP পাসওয়ার্ড পাঠানো হবে। যাথাক্রমে পাসওয়ার্ডটি বসিয়ে “বহাল” বাটনে ক্লিক করুন।
গুগল প্লে স্টোর থেকে NID Wallet অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করে স্কিনে দেখানো QR কোডটি স্ক্যান করুন। এরপরে অ্যাপসটি ওপেন করে, অ্যাপসে দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী ফেইস ভেরিফিকেশন কমপ্লিট করুন। তারপরে একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড বসিয়ে দিন।
পরবর্তীতে লগইনের জন্য অবশ্যই পাসওয়ার্ড এবং ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার সংগ্রহ করে রাখবেন। আমাদের nidw একাউন্ট রেজিস্টার করা কমপ্লিট। এখন ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে এই মর্মে একটি জিডি করতে হবে।
২.থানায় সাধারণ ডায়েরি (GD) করুন
এই ধাপে আপনার নিকটস্থ থানায় উপস্থিত হয়ে, আপনার ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে অথবা নষ্ট হয়ে গেছে এই মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি (GD) করুন। তারপরে জিডির কপি সংগ্রহ করে পুলিশ অফিসারের নাম্বার ও তার পদবী উল্লেখ করে, জিডির কপি’টি স্ক্যান করুন।
সাধারণত জিডি করার জন্য পুলিশ স্টেশনে কোন ধরনের ফি প্রদান করতে হয় না। শুধুমাত্র জিডির আবেদন জমা দিয়ে, পুলিশ অফিসারের স্বাক্ষর ও সিলসহ, জিডির কপি স্ক্যান করে রাখবেন। পরবর্তীতে এটি ডকুমেন্টস হিসেবে আপলোড করতে হবে।
৩.ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যুর জন্য আবেদন
ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যুর আবেদন করার জন্য পুনরায় https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার একাউন্ট লগইন করুন। তারপরে প্রোফাইল অপশনে প্রবেশ করে “রিইস্যু” অপশনে ক্লিক করুন।
এখান থেকে পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য “এডিট” বাটনে ক্লিক করুন। এডিট বাটনে ক্লিক করার পরে ফিস/চার্জ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি দেখাবে। ভালোভাবে বিজ্ঞপ্তিটি দেখে “বহাল” বাটনে ক্লিক করুন।
তারপরে আপনাদের সামনে নিচের ছবির মত একটি পেজ আসবে।
এডিট অপশন থেকে রিইস্যুর জন্য তথ্য প্রদান করতে হবে। প্রথমে “পূর্ণ মুদ্রণের কারণ” উল্লেখ করুন। জিডি করার সময় যদি ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে এই মর্মে জিডি করেন তাহলে “হারিয়ে গেছে” সিলেক্ট করবেন। এছাড়াও যদি অন্য কোন মর্মে জিডি করেন তাহলে সেটি উল্লেখ করবেন।
তারপরে জিডি নাম্বার প্রদান করুন। যেই থানায় জিডি করেছেন থানার ঠিকানা উল্লেখ করুন। তারপরে পুলিশ অফিসারের নাম এবং পুলিশ অফিসারের পদবী উল্লেখ করে, জিডির তারিখ উল্লেখ করুন। সর্বশেষে উপরের “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন।
ট্রানজেকশন পেইজে, ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যুর আবেদন ফি পরিশোধ করতে হবে। একটু নিচে এসে আবেদনের ধরণের “রিইস্যু” সিলেক্ট করুন। তারপরে বিতরণের ধরন থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী ধরন সিলেক্ট করুন। উপরে দেখতে পাবেন ধরন অনুযায়ী, ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যুর আবেদন ফি।
আপনারা মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ ব্যবহার করে খুব সহজেই আবেদন ফি পরিশোধ করতে পারেন। বিকাশ থেকে পেমেন্ট করার জন্য নিচের গাইডলাইন অনুসরণ করুন।
- প্রথমে বিকাশ অ্যাপসে প্রবেশ করে “পে বিল” অপশনে যান।
- তারপরে “সরকারি ফি” সিলেক্ট করুন।
- “NID service” নির্বাচন করুন।
- আবেদনের ধরন (Duplicate urgent) নির্বাচন করুন এবং আপনার আইডি কার্ড নাম্বার প্রদান করুন।
- পরবর্তীতে টাকার এমাউন্ট এবং আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড দিয়ে পেমেন্ট সম্পন্ন করুন।
কিছু সময়ের মধ্যে আপনাদের nidw একাউন্টে টাকা যুক্ত হবে। এরপরে পুনরায় ট্রানজেকশন পেইজ থেকে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন।
তারপরে কাগজপত্র পেইজে GD কপি আপলোড করতে হবে। নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন – এখান থেকে প্রথমে Admit card থেকে GD সিলেক্ট করে দিবেন। তারপরে “আপলোড” বাটনে ক্লিক করে, স্ক্যান করা জিডি কপি আপলোড করুন। তারপরে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন।
পরবর্তীতে নিশ্চিত করুন পেইজ থেকে “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করলে আপনাদের আবেদনটি সম্পূর্ণ হবে। তারপরে আপনারা চাইলে আবেদনের প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করে রাখতে পারেন। আবেদনের 10 থেকে 15 দিন পরে, 105 নাম্বার থেকে SMS এর মাধ্যমে রিইস্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
৪.ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন
সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করার জন্য পুনরায় nidw ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে, আপনাদের অ্যাকাউন্ট লগইন করুন। তারপরে প্রোফাইল অপশনে প্রবেশ করে, নিচে ডাউনলোড বাটন দেখতে পাবেন, এখানে ক্লিক করুন।
ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করার পরে ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি পিডিএফ ফাইল হিসেবে আপনাদের ডিভাইসে ডাউনলোড হবে। পরবর্তীতে এটিকে প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণত অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার 10 সংখ্যার হয়। এটি হলো আপনাদের স্মার্ট কার্ড নাম্বার।
শেষকথা
আশা করি পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার পদ্ধতি সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। পুরাতন এবং নতুন ভোটার আইডি কার্ড একই পদ্ধতিতে ডাউনলোড করতে পারবেন। তবে নতুন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য থানায় GD করার প্রয়োজন নেই।
যাদের ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে গেলে, ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করলে error আসে, শুধুমাত্র তারা থানায় জিডি করে জিডির কপি আপলোড দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন থেকে ডাউনলোড করবেন।
FAQs
এটা নির্ভর করবে বিতরণের ধরণের উপর। বিতরণের ধরন “সাধারন” হলে ভ্যাট সহ 345 টাকা এবং “জরুরী” হলে ভ্যাট সহ 575 টাকা।
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন থেকে চেক করার জন্য services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট লগইন করে, থানায় জিডি করে, ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যুর জন্য আবেদন করতে হবে। এবং আবেদনের 10-15 দিন পরে nidw ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।