একাধিকবার ভোটার হলে করণীয় সম্পর্কে জানুন

বর্তমান সময়ে দ্বৈত ভোটার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। যারা ভুলবশত কিংবা ইচ্ছা করে একাধিকবার ভোটার হয়েছেন, ইতিমধ্যেই তাদের অনেকের ভোটার আইডি কার্ড কাজ করছে না তথা তাদের ভোটার বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এই লেখাটিতে একাধিকবার ভোটার হলে করণীয় কি? তা জানানো হবে।

ইতিমধ্যে অনেকেই জানিয়েছেন একাধিকবার ভোটার হওয়ার ফলে তাদের একটিও ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে কোন কাজ করতে পারছে না, এছাড়াও অনলাইনে তাদের ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই সমস্যার কারণ হলো ইতিমধ্যে তাদের ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করা হয়েছে।

একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র একবারই ভোটার হওয়ার অধিকার রাখে। যদি অজ্ঞতাবশত অথবা চালাকি করে ২ বার ভোটার হয় সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও চোখের আইরিশের মিল থাকায় ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করা হয়। তাই আপনি যদি ভুলবশত একাধিকবার ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

একাধিকবার ভোটার হলে করণীয়

একাধিকবার ভোটার হলে তথা দ্বৈত ভোটার হলে আপনার করণীয় হলো নিজের ভুল স্বীকার করে স্ব ইচ্ছায় নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। নির্বাচন কর্মকর্তা আপনার আবেদনটি মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে প্রথম ভোটার রেখে দ্বিতীয় ভোটারটি বাতিল করে দিতে পারে।

বিশেষ করে যারা দ্বৈত ভোটার বা একাধিকবার ভোটার হয়েছেন, ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন খুঁজে খুঁজে তাদের ভোটার আইডি কার্ড বাতিলসহ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু করেছে। তাই আপনার প্রেক্ষিতে যদি এই ধরনের কোন সমস্যা থাকে তাহলে দ্রুত নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করে একটি ভোটার বাতিল করুন।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন একটি নোটিসের মাধ্যমে জানিয়েছিল যারা একাধিকবার ভোটার হয়েছেন বা দ্বৈত ভোটার হয়েছেন, ইতিমধ্যে তাদের ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করা হয়েছে। তারা যদি স্ব ইচ্ছায় নিজের ভুল স্বীকার করে তাহলে নির্বাচন কমিশন এই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে তাদের প্রথম ভোটারটি চালু করে দিবে।

আরো জানতে পারেনঃ নতুন নিয়মে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড

নির্বাচন কমিশনের কাছে এই মর্মে আবেদন করতে হবে যে ভুলবশত কিংবা অসতর্কতা বশত দ্বৈত ভোটার হয়েছেন। যদি আপনি কোন ধরনের স্বীকারোক্তি সহ নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন না করেন সেক্ষেত্রে কিছুদিনের মধ্যে আপনার ২টি ভোটার আইডি কার্ড ব্লক করে দিয়ে আপনার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।

দ্বৈত ভোটারদের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কি ব্যবস্থা নিবে?

দ্বৈত ভোটার বা একাধিকবার যারা ভোটার হয়েছেন তাদের উদ্দেশ্য করে নির্বাচন কমিশন এক নোটিশ এর মাধ্যমে জানিয়েছেন দ্বৈত ভোটারদের সকল ভোটার আইডি কার্ড বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এতে দ্বৈত ভোটারদের শাস্তি স্বরূপ জেল সহ জরিমানা হতে পারে।

এই তথ্যসূত্রে জানা যায় এই পর্যন্ত ২,০৮,০০০ দ্বৈত ভোটার বা একাধিকবার ভোটার আছে যার মধ্যে ৯২৭ জন ভোটার একাধিক ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত। ইতিমধ্যেই তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন থানায় মামলা দায়ের করেছে।

এছাড়াও অন্য যারা দ্বৈত ভোটার আছে তাদের মধ্য থেকে প্রায় সকলেরই ভোটার আইডি কার্ড বন্ধ করে দেয়া হবে। তাই ভুলবশত যদি আপনি দ্বৈত ভোটার হয়ে থাকেন যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন কমিশনের কাছে ভুল স্বীকারোক্তি আবেদন পত্র জমা করে আপনার দ্বিতীয় ভোটারটি বাতিল করুন।

দ্বৈত ভোটার হওয়ার কিছু সাধারণ কারণ

পূর্বে ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে এত পরিচর্যা বা যাচাই-বাছাই ছিল না। তাই অনেকেই ভুল করে একাধিকবার ভোটার হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ভোটার আইডি কার্ড একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হিসেবে এই কার্ডটিকে সংযুত রাখা হয়।

দ্বৈত ভোটার বা একাধিকবার ভোটার হওয়ার অনেকগুলো কারণ হতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হলো অসতর্কতা বসত দুইবার ভোটার রেজিস্ট্রেশন করেছেন। অথবা প্রথমবার ভোটার রেজিস্ট্রেশন করার পরে কোন রিপ্লাই না পেয়ে পরবর্তীতে আবার ভোটার রেজিস্ট্রেশন করেছেন।

এছাড়াও অনেকে ভোটার আইডি কার্ডের কোন তথ্যের ভুল আসার কারণে পুনরায় ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। তবে আপনি যতবারই ভোটার রেজিস্ট্রেশন করেন না কেন যখন চোখের আইরিশ ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান করবেন তখন দ্বৈত ভোটার সনাক্ত হয়ে যাবে।

কেননা বর্তমানে ভোটার আইডি কার্ডের সকল তথ্য সরকারি nidw অনলাইন ডাটা বেজে সংরক্ষণ করা হয়। এখানে একই তথ্য ২ বার প্রদান করলে সেটা শনাক্ত করা যায়। ২য় বার তথ্য প্রদান করলে সরাসরি প্রথম রেজিস্ট্রেশন এর সাথে মিলে যায়। তাই একাধিকবার ভোটার হওয়া থেকে বিরত থাকুন।

আরো জানতে পারেনঃ ভোটার কার্ড সংশোধন অ্যাপস ডাউনলোড।

ভোটার আইডি কার্ডে ভুল আসলে কি করবেন?

ভোটার রেজিস্ট্রেশন করার পরে, অনেকেরই ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে ভুল আসে। এক্ষেত্রে অনেকেই সবথেকে বড় ভুল করে তারা পুনরায় ভোটার আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন এর জন্য আবেদন করে বা আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন করে।

যার ফলে পূর্বের আইডি কার্ডটি থেকে যায় এবং একই নামে বা একই তথ্যে আরও একটি ভোটার আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন হয়, যেটা দ্বৈত ভোটারের আওতায়। যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের কোন তথ্যে ভুল আসে তাহলে পুনরায় ভোটার আইডি কার্ডের জন্য রেজিস্ট্রেশন না করে আইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন করুন।

আমাদের শেষকথা

সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আশাকরি একাধিকবার ভোটার হলে করণীয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। একাধিকবার ভোটার হলে দ্রুত নির্বাচন কমিশন অফিসারের কাছে ভুল স্বীকারোক্তি করে, একটি আবেদন পত্র জমা দিন।

এক্ষেত্রে নির্বাচন কর্মকর্তা আপনার আবেদনটি মানবিক পর্যায়ে বিবেচনা করে প্রথম ভোটার আইডি কার্ডটি রেখে দ্বিতীয় ভোটার আইডি কার্ডটি বাতিল করে দিবে। প্রথম ভোটার আইডি কার্ডে যদি কোন ধরনের ভুল থাকে তাহলে ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন করুন।

Similar Posts

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments