ভোটার আইডি কার্ডের SMS না আসলে করণীয় কি জানুন

নতুন ভোটার নিবন্ধন এর জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও চোখের আইরিশ প্রদানের পরে আমরা ১০৫ নাম্বার থেকে এসএমএস আসার অপেক্ষা করি। কেননা উক্ত এসএমএসের মাধ্যমে আমাদের ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার জানানো হবে। ভোটার আইডি কার্ডের SMS না আসলে করণীয় সম্পর্কে জানাবো এই লেখাটিতে।

অনেক সময় নেটওয়ার্ক জনিত সমস্যার কারণে আমাদের ফোনে ১০৫ নাম্বার থেকে এসএমএস এসে পৌঁছায় না। এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি? ১০৫ নাম্বার থেকে এসএমএস না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের ভোটার আইডি কার্ড কনফার্ম হয়েছে কিনা বা ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার জানতে পারি না।

এসএমএস না আসার অনেকগুলো কারণ হতে পারে যেমন নেটওয়ার্ক জনিত সমস্যার কারনে, সার্ভার ত্রুটির কারণে অথবা ভোটার আইডি কার্ড বাতিল হলে। তাই ভোটার নিবন্ধনের ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে যদি ১০৫ নাম্বার থেকে কোন ধরনের এসএমএস না আসে তাহলে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ডের SMS না আসলে করণীয়

ভোটার রেজিস্ট্রেশন করার ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে যদি আপনার মোবাইল ফোনে নির্বাচন কমিশন থেকে কোন ধরনের এসএমএস না আসে তাহলে সর্বপ্রথম আপনারা একসাথে ভোটার নিবন্ধন করেছিলেন যারা তাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

তাদের কাছে জিজ্ঞেস করুন নির্বাচন কমিশনের অফিস (১০৫) থেকে তাদের নাম্বারে কোন ধরনের এসএমএস এসেছে কিনা। যদি তাদের ফোনে এসএমএস এসে থাকে তাহলে হয়তো নেটওয়ার্ক জনিত সমস্যার কারণে আপনার ফোনে এসএমএস আসেনি অথবা ভোটার নিবন্ধন আবেদন বাতিল হতে পারে।

এছাড়াও নির্বাচন অফিসের সার্ভার ত্রুটির কারণ ও হতে পারে। ১০৫ নাম্বার থেকে যেই এসএমএস প্রদান করা হয় তার মধ্যে আপনাদের ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার থাকে। যা পরবর্তীতে ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ ও অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোডের জন্য প্রয়োজন হয়।

এই লেখাটিতে ভোটার আইডি কার্ডের SMS না আসলে করণীয় ২টি পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো হবে। আশা করি এই পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করে এই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।

গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলঃ নতুন নিয়মে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড।

পদ্ধতি ১ঃ নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করুন

যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের এসএমএস না আসে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব জেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করুন। সরাসরি উপস্থিত হয়ে জেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলে অনলাইনের মাধ্যমে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।

জেলা নির্বাচন অফিসারের নাম্বার সংগ্রহ করতে সর্বপ্রথম গুগলে গিয়ে আপনার জেলার নাম লিখে “জেলা নির্বাচন অফিস” লিখে সার্চ করুন। যেমনঃ খুলনা জেলা নির্বাচন অফিস। এরপরে সর্বপ্রথম ওই জেলার নির্বাচন অফিসের ওয়েবসাইট চলে আসবে, আপনারা উক্ত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।

এরপরে একটু নিচে এসে “আমাদের বিষয়” থেকে “কর্মকর্তাবৃন্দ তালিকা” অপশনের প্রবেশ করুন। এখানে জেলা অফিসারের নাম, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল এড্রেস ও ঠিকানা সহ বিস্তারিত দেখতে পাবেন। এখান থেকে জেলা অফিসারের নাম্বার সংগ্রহ করে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।

মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হলে ইমেইল এড্রেস এর মাধ্যমে মেইল করে রাখতে পারেন। আমি সাজেস্ট করব সরাসরি নির্বাচন অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করা। কেননা নিজে উপস্থিত হয়ে সরাসরি নির্বাচন অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করলে আপনার সমস্যা ভালোভাবে বুঝিয়ে বলতে পারবেন।

যদি আপনারা অনলাইন থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জেলা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন তাহলে অন্যান্য কর্মকর্তা হিসেবে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

পদ্ধতি ২ঃ সরাসরি অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করুন

যদি উপরের দেখানো পদ্ধতিতে নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন তাহলে সরাসরি Nidw অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করতে পারেন। নির্বাচন কমিশন অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে মতামত শেয়ার করার পদ্ধতি।

প্রথমে https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ এই লিংকে প্রবেশ করুন। এরপরে “আপনার মতামত থাকলে শেয়ার করুন” অপশনে ক্লিক করুন। যদি মোবাইল থেকে ভিজিট করেন সেক্ষেত্রে নিচের দিকে ডান কর্নারে একটি মেসেজ আইকন দেখতে পাবেন, এখানে ক্লিক করুন।

ভোটার আইডি কার্ডের SMS না আসলে করণীয়

এরপরে উপরের ছবির মত একটা পেইজে নিয়ে আসবে এখানে সর্বপ্রথম আপনার নাম ইংরেজিতে বসিয়ে দিবেন, আপনার মোবাইল নাম্বার বসিয়ে দিবেন, আপনার একটি সচল ইমেইল এড্রেস বসিয়ে দিবেন।

তারপরে নিচের মতামত / পরামর্শ ফর্মে আপনার সমস্যার কথা উল্লেখ করতে হবে। অবশ্যই আপনার মতামতটি সর্বোচ্চ ১০০০ অক্ষরের মধ্যে লিখে কমপ্লিট করতে হবে। এরপরে নিচে থাকা ক্যাপচাটি পূরণ করে “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করবেন।

বর্তমানে বাংলাদেশের নাগরিকের সকল তথ্য নির্বাচন কমিশন অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (Nidw) সংগ্রহ করে তাই সঠিক তথ্য দিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে অবশ্যই আপনার সমস্যার সমাধান হবে।

গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলঃ ভোটার আইডি কার্ড পেতে কতদিন লাগে।

মতামত জানানোর পদ্ধতিঃ

প্রথমে মার্জিত ভাষায় জনাব অথবা সার উল্লেখ করতে হবে। তারপরে আপনি কত তারিখে নির্বাচন অফিসে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও চোখের আইরিশ প্রদান করেছেন, ছবি তুলেছেন উক্ত তারিখ উল্লেখ করতে হবে। এরপরে ভোটার স্লিপের নাম্বার উল্লেখ করতে হবে।

তারপরে আপনার সাথে যারা ভোটার হয়েছে তাদের ফোনে ১০৫ নাম্বার থেকে এসএমএস এসেছে কিনা, এসএমএস না আসার কারণে আপনার কি কি সমস্যা হচ্ছে, ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য অনুযায়ী আপনার জন্ম তারিখ বসিয়ে দিতে হবে।

আবেদনটি সুন্দর ও মার্জিত ভাষায় লিখতে হবে। nidw-তে মতামত জানানোর নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই। আপনার সমস্যা অনুযায়ী ও নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী সুন্দরভাবে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এবং আপনার সমস্যাটি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হবে।

আমাদের শেষকথাঃ

সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আশা করি ভোটার আইডি কার্ডের SMS না আসলে করণীয় কি? এই সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন। যদি ভোটার নিবন্ধন হওয়ার অনেকদিন পরেও আপনাদের ফোনে ১০৫ থেকে এসএমএস না আসে তাহলে উপরে দেখানো পদ্ধতি দুটি অবলম্বন করতে পারেন।

তবে প্রথমে আপনাকে কনফার্ম হতে হবে আপনার সাথে যারা ভোটার নিবন্ধিত হয়েছিল তাদের ফোনে নির্বাচন কমিশন তথা ১০৫ নাম্বার থেকে এসএমএস এসেছে কিনা। যদি তাদের ফোনে এসএমএস আসে এবং আপনার ফোনে এসএমএস না আসে তাহলে উল্লেখিত পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করুন।

Similar Posts

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments