নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ডের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করার কিছুই নেই। এই দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে ভোটার আইডি কার্ডের প্রয়োজন হয়। এই লেখাটিতে আলোচনা করা হবে নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম সম্পর্কে।

বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করা দরকার হয়। এছাড়াও ভোটার আইডি কার্ডের আসল ও নকল সত্যতা যাচাইয়ে অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চেক করার প্রয়োজন হয়ে থাকে।

তাই আপনাদের সুবিধার্থে এই লেখাটিতে মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করার সম্পূর্ণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করতে ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার অথবা স্লিপ নাম্বার (ভোটার নিবন্ধন এর সময় নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া) প্রয়োজন হবে।

এই দুটোর যেকোনো একটি নাম্বার থাকলে আপনি একাধিক পদ্ধতিতে খুব সহজেই অনলাইন থেকে আপনার ভোটার আইডি কার্ডটি চেক করে নিতে পারবেন।

নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক

শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বার দিয়ে কখনোই ভোটার আইডি কার্ড চেক করা সম্ভব নয়। কেননা Nid সার্ভার কখনোই ব্যক্তির মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে রাখে না। এখানে শুধুমাত্র ব্যক্তির নাম, জন্ম তারিখ ও ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার সংগ্রহ করে।

তাই আপনারা চাইলেও শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বার দিয়ে কখনোই ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন না। তবে অনেক ক্ষেত্রে ভেরিফিকেশনের স্বার্থে ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার বা স্লিপ নাম্বার এর পাশাপাশি মোবাইল নাম্বার প্রয়োজন হয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ যদি আপনারা জানতে চান আপনার টেলিকম সিমটি কোন আইডি কার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা তাহলে, সিম সহ নিকটস্থ রিটেলার পয়েন্ট বা কাস্টমার এজেন্ট পয়েন্টে যোগাযোগ করতে হবে। তারা আপনার সিমটি চেক করে কার নামে রেজিস্ট্রেশন করা তা জানিয়ে দিবে।

তবে যদি শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বার দিয়ে আপনার আইডি কার্ডের তথ্য চেক করতে চান তাহলে এটা সম্ভব নয়। ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য বের করার জন্য স্লিপ নাম্বার বা ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার এর পাশাপাশি মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করতে পারেন। চলুন নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক করার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেই।

গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলঃ NID দিয়ে কয়টি সিম রেজিস্ট্রেশন করা যায় দেখুন

ভূমিকর ওয়েবসাইট থেকে আইডি কার্ড চেক

বর্তমানে আমরা খুব সহজেই ভূমিকর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো প্রদান করে আমাদের ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চেক করতে পারবো। এর জন্য প্রথমে https://ldtax.gov.bd/citizen/register এই লিংকে ক্লিক করে ভূমিকর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের নাগরিক কর্নারে প্রবেশ করুন।

নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক

লিংকে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনাদের উপরের ছবির মত একটি পেইজে নিয়ে আসবে, এখান থেকে প্রথমে আপনার একটি সচল মোবাইল নাম্বার বসিয়ে দিন। নিবন্ধন সম্পন্ন না হলে উক্ত নাম্বারে OTP ভেরিফিকেশন করা হবে।

এরপরে আপনাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার অথবা ভোটার নিবন্ধনের সময় নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া স্লিপ নাম্বার বসিয়ে দিন। তারপরে ভোটার আইডি কার্ডে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জন্ম তারিখ সিলেক্ট করুন। উপরের তথ্যগুলো ভালোভাবে চেক করে “পরবর্তী পদক্ষেপ” বাটনে ক্লিক করুন।

কিছু সময়ের মধ্যেই আপনাদের ভোটার আইডি কার্ডের ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য দেখতে পাবেন। ভূমিকর ওয়েবসাইট থেকে খুব সহজেই আপনার মোবাইল নাম্বার ও জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চেক করতে পারবেন।

সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিঃ

  • প্রথমে উপরের লিংকে ক্লিক করে ভূমিকর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
  • এরপরে নাগরিক কর্নারে আপনাদের মোবাইল নাম্বার ও জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার প্রদান করুন।
  • তারপরে জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী জন্মতারিখ (দিন-মাস-বছর) ফরমেটে সিলেক্ট করুন।
  • এরপরে আইডি কার্ডের তথ্য দেখার জন্য “পরবর্তী পদক্ষেপ” বাটনে ক্লিক করুন।

গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলঃ ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করুন অনলাইনে

অ্যাপসের মাধ্যমে আইডি কার্ড চেক

যদি উপরের পদ্ধতিতে ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে ব্যর্থ হন তাহলে সরাসরি গুগল প্লে স্টোর থেকে NID Checker BD অ্যাপসটি ডাউনলোড করে ছবিসহ আপনাদের ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চেক করতে পারবেন।

এর জন্য প্রথমে “NID Checker BD” এখানে ক্লিক করে সরাসরি গুগল প্লে স্টোর থেকে সম্পূর্ণ ফ্রিতে অ্যাপসটি ডাউনলোড করুন। এরপরে অ্যাপসে প্রবেশ করে প্রথমে আপনাদের ১০ কিংবা ১৩ কিংবা ১৭ সংখ্যার NID নাম্বারটি বসিয়ে দিন।

নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক

তারপরে আপনাদের একটি মোবাইল নাম্বার বসিয়ে ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী জন্ম তারিখ বাছাই করুন। উপরের সকল তথ্যগুলো ঠিক থাকলে “ভেরিফাই করুন” বাটনে ক্লিক করুন। কিছু সময়ের মধ্যে আপনাদের ছবিসহ এনআইডি কার্ডের বিস্তারিত তথ্য দেখাবে।

সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিঃ

  • প্রথমে NID Checker BD অ্যাপসটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন।
  • এরপরে অ্যাপস এর মধ্যে প্রবেশ করে ১০ কিংবা ১৩ কিংবা ১৭ সংখ্যার NID নাম্বারটি বসিয়ে দিন।
  • তারপরে আপনাদের মোবাইল নাম্বার ও জন্ম তারিখ বসিয়ে দিন।
  • উপরের সকল তথ্যগুলো ঠিক থাকলে “ভেরিফাই করুন” বাটনে ক্লিক করুন।

শেষ কথা

উপরে দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী খুব সহজেই মোবাইল নাম্বার দিয়ে আপনার ভোটার আইডি কার্ডটি চেক করতে পারবেন। তবে শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বার দিয়ে আপনি কখনোই কোনোভাবে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চেক করতে পারবেন না।

যদি কেউ আপনাকে শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার আশ্বাস দেখায় তাহলে এটা মিথ্যা। কেননা নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে কখনোই ব্যক্তির ফোন নাম্বার সংরক্ষিত থাকে না। এখানে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত তথ্যসহ তার ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার সংরক্ষণ থাকে।

Similar Posts

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments